প্রকাশিত: ০৪/০৩/২০২০ ৮:৩৪ পিএম

শিক্ষায় অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্ব এখনও মেয়েদের জন্য সহিংস ও অত্যন্ত বৈষম্যমূলক। ইউনিসেফ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও ইউএন উইমেন বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি সংখ্যক মেয়ে শিশু স্কুলে যাচ্ছে এবং স্কুলে পড়াশোনা অব্যাহত রাখছে। তবে শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জন থাকলেও তা মেয়েদের জন্য আরও সমতাভিত্তিক ও কম সহিংস পরিবেশ তৈরিতে সহায়তার ক্ষেত্রে সামান্যই ভূমিকা রেখেছে।

নারীর অবস্থা বিষয়ক কমিশনের ৬৪তম অধিবেশনের আগে প্রকাশিত ‘মেয়েদের জন্য একটি নতুন যুগ: ২৫ বছরের অগ্রগতির খতিয়ান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত দুই দশকে বিশ্বব্যাপী স্কুলের বাইরে থাকা মেয়েদের সংখ্যা কমে ৭ কোটি ৯০ লাখে নেমে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই বেশি আগ্রহী ছিল শুধু গত দশকেই। তা সত্ত্বেও নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনও নিয়মিত ঘটনা।

এই বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে জেনারেশন ইক্যুয়ালিটি প্রচারাভিযানের প্রেক্ষাপটে এবং নারী ও মেয়েশিশুদের অধিকার আদায়ে ঐতিহাসিক নীলনকশা হিসেবে পরিচিত বেইজিং ঘোষণা ও প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে।

প্রতিবেদনে উদাহরণস্বরূপ বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী পাচারের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের শনাক্ত করা গেছে তাদের ৭০ শতাংশই ছিল নারী এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌন শোষণের কারণে তারা পাচারের শিকার হয়। বিশ্বব্যাপী ১৫-১৯ বছর বয়সী প্রতি ২০ জন মেয়ের মধ্যে একজন বা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মেয়ে তাদের জীবনে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যা নারী ও মেয়ে শিশুরা যত ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হয় তার মধ্যে সবচেয়ে সহিংস রূপগুলোর একটি।

ইউনিসেফ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও ইউএন উইমেন বলেছে, শিক্ষা, পুষ্টি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর ক্ষেত্রে অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এই নেতিবাচক প্রবণতা প্রত্যক্ষ করেছে। মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) ২০১৯ অনুসারে, বিগত এক মাসে লালনপালনকারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক শাস্তি বা আগ্রাসনের মুখোমুখি হওয়া ১-১৪ বছর বয়সী শিশুর হার ছিল ৮৮.৮ শতাংশ।

এমআইসিএস ২০১৯-এ আরও উঠে এসেছে যে, ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের ৩৭ শতাংশ সন্ধ্যার পর একা চলাফেরার ক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করে না। ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের অর্ধেকের বেশির বিয়ে হয় তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই। প্রায় ২৪ শতাংশ নারী অপরিণত বয়সে সন্তানের জন্ম দিচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশে ১৫-৪৯ বছর বয়সী প্রতি চারজন নারীর একজন (২৫.৪ শতাংশ) পাঁচ কারণে স্বামীর দ্বারা প্রহার করা ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করেন। কারণগুলো হলো- স্বামীকে কিছু না জানিয়ে ঘরের বাইরে গেলে, সন্তানদের প্রতি অবহেলা করলে, স্বামীর সাথে তর্ক করলে, স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জানালে এবং খাবার পুড়িয়ে ফেললে।

জরিপের এসব নতুন ফলাফল সত্ত্বেও সহিংসতা বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গিকারকে ইউনিসেফ স্বাগত জানায়।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে দেশটির আসিয়ান সভাপতির ভূমিকা ...

চলতি বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে দেশটির ...